২১শে আগস্ট, ২০২৫, ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২

সংস্কৃতি মানে শুধু রীতি নয়, এটি জীবনের পরতে পরতে লুকানো এক মহাজ্ঞানতন্ত্র। বিজ্ঞান, ধর্ম, এবং ইতিহাসের ছায়ায় দাঁড়িয়ে আমরা নিজেরাই এক মানচিত্র—চিন্তার, টানাপোড়েনের, জটিলতার। ছবি: এআই

সংস্কৃতি কি শুধু উৎসব, নাকি এটি আমাদের জ্ঞান, বিশ্বাস আর অস্তিত্বের গভীরতম মানচিত্র? এক কথায় উত্তর হয় না, বিজ্ঞানের সূত্র, ধর্মের দৃষ্টি আর জনপদের গল্প—সব মিলিয়েই গঠিত হয় মানুষের চেতনার জটিল জ্যামিতি।

আমেরিকার এক লাইব্রেরিতে কাজ করছিলাম। একজন বৃদ্ধা আমার হিসাব কষার দক্ষতায় অভিভূত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি এত দ্রুত হিসাব করলে কীভাবে?’ আমি বললাম, ‘আমরা বাংলায় ছোটবেলা থেকেই সংখ্যাতত্ত্বের এমন সব পদ্ধতি শিখি, যা হাতে-কলমে এবং মাথায় করা যায়। ক্যালকুলেটর লাগে না।’ তিনি বিস্ময়ে বললেন, ‘এটা তো একেবারে মাইন্ড ম্যাজিক!’ কিন্তু এটা কোনো জাদু না, বরং আমার সংস্কৃতির ফল।

এই ঘটনা আমাকে ভাবিয়েছে: আমরা যা করি, যেমন করে ভাবি, জীবন যাপন করি—সবই আমাদের সংস্কৃতির প্রতিফলন। সংস্কৃতি মানেই আমরা। আমরা কেবল সংস্কৃতির বাহক নই, বরং সংস্কৃতির স্রষ্টাও বটে। সংস্কৃতি হলো একটি জটিল, বহুস্বরী, পরিবর্তনশীল ব্যবস্থা যা আমাদের জ্ঞানচর্চা, ধর্মীয় বিশ্বাস, বিজ্ঞানচর্চা, আর নিত্যপ্রয়োজনীয় অভ্যাস দ্বারা গঠিত।

সংস্কৃতি একটি জটিল ও অভিযোজিত ব্যবস্থাপনা

সংস্কৃতি কখনোই একরৈখিক বা স্থির কিছু নয়। এটি একটি জটিল অভিযোজ্য ব্যবস্থা (Complex Adaptive System), যেখানে বহু উপাদান পরস্পরের সঙ্গে আন্তঃক্রিয়া করে এবং নিজেদের আচরণ পরিবর্তন করে। এই উপাদানগুলো স্থানীয় নিয়ম অনুসরণ করে, তবে তাদের সম্মিলিত কার্যকলাপ থেকে উদ্ভূত হয় বৃহৎ প্যাটার্ন। পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা থাকে এদের। জীববৈচিত্র্য, সমাজ, বাজার ও জলবায়ু এমন ব্যবস্থার উদাহরণ। যেমন সংস্কৃতি, যা মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, বিশ্বাস ও প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত ও পরিবর্তনশীল। ক্লিফোর্ড গিয়ার্টস সংস্কৃতিকে বলেছেন ‘a web of significance’, (গুরুত্বের জাল) যেখানে প্রতিটি অভ্যাসের পেছনে রয়েছে একটি বিরাট জাল যার বুনন অর্থ ও অর্থবোধ তৈরিতে কাজ করে। অর্থাৎ, প্রতিটি সাংস্কৃতিক চর্চাই কোনো এক বিশ্বাস, জীবনদর্শন বা পরিস্থিতির প্রতিফলন। সংস্কৃতি হলো মানুষের তৈরি অর্থপূর্ণ অর্থের জাল। মানুষ নিজেই এই জালে নিজেকে জড়ায় এবং এই জাল বোঝার মাধ্যমে আমরা একটি সমাজের অর্থ ও আচরণ ব্যাখ্যা করতে পারি। গিয়ার্টজ মনে করেন, সংস্কৃতি বিশ্লেষণ মানে হলো অর্থের স্তরগুলো ব্যাখ্যা করা—এটি একটি ব্যাখ্যামূলক বিজ্ঞান, কেবল আচরণ নয়, তার পেছনের অর্থ বোঝা।

সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাও বলছে যে সংস্কৃতি শুধু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আনা সিং, মনিকা গ্যাগ্লিয়ানো ও পিটার ভোলোবেন তাদের নিজ নিজ কাজে দেখিয়েছেন, উদ্ভিদ ও প্রাণীদের মধ্যেও আছে সংস্কৃতিমূলক আচরণ—সম্পর্ক, শিক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া। গাছেরা একে অপরকে রাসায়নিক বার্তা পাঠিয়ে সতর্ক করে; মাছেরা গ্রুপের মধ্যে আচরণ শেখে। অথচ পাশ্চাত্য বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে প্রাণী ও উদ্ভিদকে কেবল ‘automaton’ (যার প্রাণশক্তি মূলত যান্ত্রিক, অর্থাৎ যে নড়াচড়া করে কেবল প্রাকৃতিক নিয়মের বশবর্তী হয়ে, সজ্ঞানে স্বেচ্ছায় না) হিসেবে দেখা হয়, সেখানে এই সম্পর্কের জটিলতাকে অস্বীকার করা হয়।

পবিত্র ও অপবিত্রের বিভাজন: পশ্চিম ও প্রাচ্যের দৃষ্টিভঙ্গির সংঘাত

এমিল ডুর্খেইম তার সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে পশ্চিমা সংস্কৃতির একটি মূল দ্বৈততা তুলে ধরেন—পবিত্র (sacred) ও অপবিত্র (profane)। এই ধারা পশ্চিমা ধর্মতত্ত্ব ও জীবনদর্শনে দৃঢ়ভাবে গাঁথা। পশ্চিমা ইতিহাস ও সংস্কৃতির নিজস্ব ঐতিহ্যে পশ্চিমা সমাজতত্ত্ব দুনিয়াবি জগৎ, যেমন অর্থনীতি, রাজনীতি, সংসার ইত্যাদিকে ঈশ্বর, চার্চ বা অতিপ্রাকৃতিক শক্তির আওতা থেকে পৃথক করেছে। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই মানুষকে বা নিজ জাতিকে কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরার ঐতিহ্য জারি রেখেছে। কিন্তু প্রাচ্যতাত্ত্বিক চিন্তাধারায় এই রৈখিক বিভাজন প্রায় অনুপস্থিত।

হিন্দুধর্মে বেদান্ত ও তন্ত্র দর্শনে সংসার ও সাধনা একে অপরের বিপরীত নয়; বরং পরিপূরক। বৌদ্ধধর্মে প্রতীত্যসমুৎপাদ—অর্থাৎ সম্পর্কের ভিত্তিতে সৃষ্টির দর্শন—একটি মৌলিক নীতি। ইসলামেও, কুরানে আল্লাহ বলেন: ‘প্রতিটি সৃষ্ট জীবকেই আমি এক জাতিরূপে সৃষ্টি করেছি।’

(সুরা আন-আম, ৬:৩৮)

সাঁওতালদের মতে, আদিতে কিছুই ছিল না—না আকাশ, না মাটি, না সময়। তখন শুধু ছিলেন ঠাকুর জিউ, যিনি দুটি হাঁস, হাড়াম ও হাড়ামিকে সৃষ্টি করেন। তারা ভেসে বেড়ায় এক বিস্তীর্ণ আদিসাগরে। পরবর্তীতে, জিউ সৃষ্টি করেন জমিন, পাহাড়, গাছপালা। হাড়াম ও হাড়ামি মিলিত হয়ে ডিম পাড়ে, আর সেই ডিম থেকে জন্ম নেয় বিভিন্ন প্রাণী, মানুষ, ও অন্যান্য জীব। এই কাহিনিতে মানুষ, গাছ, পশু-পাখি—সব এক সাধারণ উৎস থেকে উদ্ভূত। সাঁওতাল বিশ্বাসে প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান আত্মীয়, এবং তাই তারা প্রকৃতিকে পূজনীয় আত্মীয় মনে করে।

রাজবংশী কোচদের একটি প্রাচীন সৃষ্টি গল্প অনুযায়ী, প্রথমে ছিল এক বিশাল জলরাশি। সেখান থেকে উদ্ভূত হন বড়ো ঠাকুর। তিনি প্রথম সৃষ্টি করেন মাটি, তারপর গাছপালা ও পশুপাখি। এরপর একদিন, মাটির বুক থেকে গড়ে তোলেন মানুষের আকার। এই মানুষ প্রথমে নির্বাক ও নিঃসচল ছিল। গাছের পাতার দোল এবং পাখির গান শুনে সে কথা শিখে, নাচে। এই গল্পে মানুষ প্রকৃতি থেকে শিখে—অর্থাৎ, মানবজ্ঞান প্রকৃতিজ্ঞান থেকে উদ্ভূত। রাজবংশীরা বিশ্বাস করেন, প্রকৃতি আমাদের শিক্ষক এবং আমরা তারই একটি অংশ।

এটি স্পষ্টতই সম্পর্কনির্ভর একটি সৃষ্টিতত্ত্ব, যেখানে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখি, উদ্ভিদ, এমনকি অদৃশ্য সত্তাও সৃষ্টির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

বিজ্ঞানও সংস্কৃতির অন্তর্গত

সচরাচর বিজ্ঞানকে সংস্কৃতির বাইরে, এক ধরনের subject-neutral truth (বিষয় বা ব্যক্তি নিরপেক্ষ সত্য) বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু,টমাস কুন তার Structure of Scientific Revolutions (বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের অবকাঠামো)-এ দেখিয়েছেন যে, বিজ্ঞানও একটি নির্দিষ্ট, সময়, সমাজ ও সাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিতের মধ্যেই বিকশিত হয়। ‘Paradigm Shift’ (দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন) ধারণার মাধ্যমে তিনি বলেন, বৈজ্ঞানিক জ্ঞানও এক ধরনের সামাজিক ঐকমত্য ও ঐতিহ্যের ফল।

ব্রুনো লাটোর এবং স্টিভ উলগার তাদের ‘Laboratory Life’ (গবেষণাগারের জীবন) গ্রন্থে প্রমাণ করেন যে, বিজ্ঞান হলো এক ধরনের সাংস্কৃতিক অভ্যাস—যেখানে ভাষা, রীতি, ক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞানকে গঠন করে। অর্থাৎ বিজ্ঞান, ধর্ম ও শিল্প—সবই সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় প্রতিফলন।

সংস্কৃতির সঙ্গে বিজ্ঞানের পটপরিবর্তন

একাদশ শতকের গোড়ার দিকে, ফাতেমি খলিফা আল-হাকিম বি-আমরুল্লাহ শুনলেন, এক বিজ্ঞানী দাবি করছেন যে তিনি নীল নদীর প্লাবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তিনি ছিলেন বসরা-নিবাসী হাসান ইবন আল-হাইসম, যিনি দর্শন ও প্রকৌশলে অভিজ্ঞ ছিলেন। খলিফা তাকে কায়রোতে আমন্ত্রণ জানালেন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিলেন।

ইবন আল-হাইসম দক্ষিণ মিসর ঘুরে বুঝলেন, তার পরিকল্পিত বাঁধ তৈরি তখনকার প্রযুক্তিতে অসম্ভব। কিন্তু খলিফা ছিলেন খামখেয়ালি—ব্যর্থতা মানে মৃত্যু। ইবন আল-হাইসম নিজেকে রক্ষা করতে পাগলের ভান করলেন। ফলে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয় কায়রোতেই।

এই বন্দিত্বেই তিনি লেখেন তার যুগান্তকারী গ্রন্থ ‘কিতাব আল-মানাযির’ (Book of Optics বা আলোর বই)। সেখানে তিনি পর্যবেক্ষণ, অনুমান, পরীক্ষা ও ফলাফল বিশ্লেষণ—এই চার ধাপে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সূচনা করেন। হাসান হাইপথেসাইজ করেন যে আলো সরলরেখায় চলে, তাই প্রতিবিম্ব উল্টো হয় এবং এই সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে তিনি তৈরি করেন ‘লা লান্তেরনা ম্যাজিকা’ বা জাদুলণ্ঠন, যেটা ছোট একটা বাক্সের ভেতর বস্তুর উল্টো প্রতিবিম্ব তৈরি করত। এই ঘটনাটা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর একটি, কারণ এর মাধ্যমে একটি প্রাকৃতিক নিয়মের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তার ভিত্তিতে কোনো প্রাকৃতিক ঘটনাকে পুনরাবৃত্ত করতে পারার মধ্যে দিয়ে , প্রাকৃতিক জগতের ওপর মানুষের প্রত্যক্ষ প্রভাব সৃষ্টির উপায় তৈরি হয়।

ইবন আল-হাইসমের কাজ দেখায় যে বিজ্ঞান কেবল গবেষণাগারে নয়, রাজনীতি, আতঙ্ক ও নৈতিক সিদ্ধান্ত থেকেও জন্ম নিতে পারে। কেবল তাই নয়, বিজ্ঞান পদ্ধতিতে আল-হাইসামের এই অবদানকে যদি কেবল মাত্র আরব বা মুসলিম বিজ্ঞান হিসেবে দেখা হয়, তাহলে সেটা বড় ধরনের ভুল বোঝাবুঝি হবে। বিজ্ঞান যদি হয় মানুষের যৌক্তিক উত্তরাধিকার, তাহলে এই উত্তরাধিকারে প্রত্যেকের অবদানকেই স্বীকার এবং চর্চা করতে হবে।

ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ঔপনিবেশিক অপপ্রয়োগ

ঔপনিবেশিক যুগে হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম ও আদিবাসী ধর্মকে অন্ধবিশ্বাস, পৌত্তলিকতা কিংবা ‘কুসংস্কার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম হয় ঔপনিবেশিক পণ্ডিতদের রচনায়, যেমন জেমস মিল বা ম্যাক্স মুলার। আদিবাসী ধর্মের জটিল রীতিকে ‘ফেটিশ’ বা ‘আদিম’ আখ্যা দিয়ে তাদেরকে সাংস্কৃতিক নির্লিপ্ততায় ফেলে দেওয়া হয়।

এই দৃষ্টিভঙ্গির ফল, আজও আমরা দেখতে পাই—বহুমাত্রিক ধর্মীয় রীতি ও চিন্তাকে অনেক সময় ‘বিজ্ঞানবিরোধী’ বা ‘অতীতগ্রস্ত’ হিসেবে দেখা হয়। অথচ এই ধারাগু্লো প্রকৃতি, জীবন এবং অস্তিত্ব সম্পর্কে মানুষের অত্যন্ত দীর্ঘ সময়ের জ্ঞানকে ধারন করে। যা আমাদের তথ্যের এই স্যাচুরেশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে অকেজো হয়ে যাওয়া বুদ্ধিবৃত্তিক মানব সমাজের যুগে দিশা হিসেবে কাজ করতে পারে।

সংস্কৃতির বৈচিত্র্য মানেই জ্ঞানচর্চার বহুমুখীতা

যেহেতু সংস্কৃতি সকল কর্মকাণ্ডের ভিত্তি, তাই বিভিন্ন সংস্কৃতির অস্তিত্ব মানে বিভিন্ন জ্ঞানচর্চার পথ। যেমন শূন্য সংখ্যাটি মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছে। ড. কাজী মোতাহার হোসেন তার ‘গণিতশাস্ত্রের ইতিহাস’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, মেসোপটেমিয়ান, ভারতীয় এবং চীনারা দীর্ঘ সময় ধরে শূন্য নিয়ে কাজ করে আসছে। মেসপটেমিয়ান এবং মায়ারা শূন্যকে স্রেফ স্থানাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করতেন। পেশোয়ারের কাছে পাওয়া বাখশালী পুঁথিতেও শূন্যকে প্লেস হোল্ডার বিন্দু হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু শূন্য ব্রহ্মগুপ্তের দ্বারা গাণিতিকভাবে সংখ্যা হিসেবে অষ্টম খ্রিস্টাব্দে সংজ্ঞায়িত হবার আগে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং আরো নানা রকম সংস্কৃতিতে আলোচিত হয়ে এসেছে। নাগার্জুন এবং অন্যান্য পণ্ডিতদের যৌক্তিক অবদান ব্যতীত আমরা শূন্য সংখ্যাটিকে পেতাম না। এবং স্রেফ এই সংখ্যাটির অভাবে, আজকের সভ্যতা অকল্পনীয় ছিল।

উন্নয়ন ও শিক্ষায় সংস্কৃতির চর্চা ফের জরুরি

আজকের বিশ্বে উন্নয়ন মানেই যেন শুধু অবকাঠামো নির্মাণ, প্রযুক্তির প্রয়োগ, কিংবা সিলেবাসভিত্তিক শিক্ষার পুনরাবৃত্তি। কিন্তু আসল উন্নয়ন হলো চিন্তার মুক্তি ও বৈচিত্র্যের স্বীকৃতি। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এখন সময় এসেছে—বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পদ্ধতির চর্চা, গবেষণা ও প্রয়োগের মাধ্যমে বিজ্ঞান, দর্শন, গণিত, ব্যবসা, প্রযুক্তি এবং সমাজবিজ্ঞানকে পুনর্বিন্যস্ত করার। উন্নয়ন শুধুই রাস্তাঘাট নয়—উন্নয়ন মানে মানুষের অভিজ্ঞতা, অনুভব ও কল্পনার জগতে সম্প্রসারণ। আর সেই সম্প্রসারণের মূল হাতিয়ার আমাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। বাংলার ইতিহাস যে কেবল ঔপনিবেশিক শোষণের ইতিহাসই নয়, বরং বিচিত্র জাতি, পরিচয়, ভাষা ও সংস্কৃতির চলমান মিথষ্ক্রিয়া, তা উপলব্ধির সবচেয়ে জরুরি সময় হলো এখন।

সূত্রসমূহ (চয়ন)

১. টমাস কুন–দ্য স্ট্রাকচার অব সায়েন্টিফিক রেভলিউশনস

২. এমিল দুরখেইম–দ্য এলিমেন্টারি ফর্মস অব রিলিজিয়াস লাইফ

৩. ব্রুনো লাতুর ও স্টিভ উলগার–ল্যাবরেটরি লাইফ

৪. পিটার ভোহ্লেলেবেন–দ্য হিডেন লাইফ অব ট্রিজ

৫. আনা সিং–দ্য মাশরুম অ্যাট দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড

৬. মনিকা গাগলিয়ানো–দাস স্পোক দ্য প্ল্যান্ট

৭. কোরান–সূরা আল-আন‘আম ৬:৩৮

৮. আল-গাজ্জালি–তাহাফুত আল-ফালাসিফা

৯. ইবন রুশদ (আভারোয়েস)–তাহাফুত আল-তাহাফুত

১০. গ্যাভিন ফ্লাড–দ্য ইম্পর্ট্যান্স অব রিলিজিয়ন

১১. তালাল আসাদ–জিনিয়লজিস অব রিলিজিয়ন

১২. দীপেশ চক্রবর্তী–প্রোভিন্সিয়ালাইজিং ইউরোপ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • 0
  • 0
© 2025 Dhumketu . All Rights Reserved. || Created by FixiFite WEB SOLUTIONS.