ইসলামিয়া হাসপাতাল বাংলাদেশ, রায়েরবাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সম্প্রতি ইসলামিয়া হাসপাতাল বাংলাদেশের কর্পোরেট অফিসে দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব আবুল হাসনাত মোঃ মোরতাজা। তিনি হাসপাতালের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে প্রতিটি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর দায়িত্বশীলতা ও পেশাদারিত্ব বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে স্বাস্থ্য সেবাকে এবাদত হিসেবে নিতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ করেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের মেডিকেল ডাইরেক্টর ডাঃ মোঃ খলিল উল্লাহ, দারস উপস্থাপন করেন তামিরুল মিল্লাত মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতি মিজানুর রহমান। আলোচনা করেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতাল, কাকরাইল শাখার প্রশাসনিক ইনচার্জ আব্দুল আজিজ রিয়াদ, হাসপাতাল ইনচার্জ জনাব আবু জাফর মোঃ সালেহ এবং লিগ্যাল ইনচার্জ জনাব আবুল বারাকাত সহ অনেকে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির ‘সমন্বিত’ নীতিমালা

সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারীদের জন্য একটি সমন্বিত পদোন্নতি নীতিমালা চালু করেছে। এ উদ্দেশ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য আলাদা এবং বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আগে প্রতিটি ব্যাংক নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী পদোন্নতি দিত, কিন্তু এখন একই মানদণ্ডে সব প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতি নিশ্চিত করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ‘রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মচারী পদোন্নতি নীতিমালা-২০২৫’ এবং ‘রাষ্ট্রমালিকানাধীন বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মচারী পদোন্নতি নীতিমালা-২০২৫’ নামে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কার্যপদ্ধতি আলাদা হওয়ায় তাদের জন্য পৃথক নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল)। এদের জন্য প্রযোজ্য হবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের পদোন্নতি নীতিমালা। অন্যদিকে, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশনের জন্য প্রযোজ্য হবে বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা। একই সময়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীদের ব্যাংকভেদে ভিন্ন সময়ে পদোন্নতি হত। এখন সমন্বিত নীতিমালা চালু হওয়ায় সরকারের আশা, সব ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান একই সময়ে পদোন্নতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। এ নীতিমালা অনুযায়ী সিনিয়র অফিসার থেকে উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) পর্যন্ত পদোন্নতি দেওয়া হবে। পদোন্নতির জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কমিটি এবং সহায়ক কমিটি গঠন করা হবে। পদোন্নতির জন্য যে কোনো ধরনের তদবির বা সুপারিশ করা হলে তা ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে। পদোন্নতি দেওয়া হবে শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরির সন্তোষজনক রেকর্ড, মেধা, কর্মদক্ষতা, প্রশিক্ষণ, সততা এবং জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে। স্নাতক ডিগ্রি ছাড়া কেউ পদোন্নতির যোগ্য হবেন না। ফিডার পদে শেষ তিন বছরের মধ্যে যে কোনো এক বছরের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) যদি সন্তোষজনক না হয়, তবে প্রার্থী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন না। যদি কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে, বিভাগীয় মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে দণ্ডকাল চলমান থাকে, অথবা ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত বা দণ্ডিত হন, তবে তাকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হবে না। পদোন্নতির জন্য মোট ১০০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। এসিআর-এর ৫ বছরের গড় নম্বর পাবে ৪৫, শিক্ষাগত যোগ্যতায় ১৫, ফিডার পদে চাকরির সেবাকালে ১৫, মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতায় ৪, ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা (ব্যাংকিং ডিপ্লোমা) এ ১০, দুর্গম এলাকায় কাজের অভিজ্ঞতায় ১, শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজের অর্জনে ২ এবং সাক্ষাৎকার বা মৌখিক পরীক্ষায় ৮ নম্বর দেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষায় অন্তত ৪ নম্বর পেতে হবে এবং বাকি ৯২ নম্বরের মধ্যে কমপক্ষে ৭৫ নম্বর পেতে হবে। এ দুটি নম্বর যোগ করে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে পদোন্নতির ভিত্তিকাল হবে ৩১ ডিসেম্বর, আর বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে হবে ৩০ জুন। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ডিজিএম পদে পদোন্নতির জন্য ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হবে, যার সভাপতি হবেন ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের চেয়ারম্যান। এজিএম পদে পদোন্নতির জন্য কমিটির সভাপতি হবেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। সিনিয়র অফিসার থেকে ডিজিএম পদে পদোন্নতির জন্য এমডি বাছাই কমিটি ও সহায়ক কমিটি গঠন করবেন। অন্যদিকে, বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সিনিয়র অফিসার থেকে ডিজিএম পদে পদোন্নতির জন্য কমিটির সভাপতি হবেন এমডি, আর পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটির সভাপতি হবেন ডিএমডি (প্রশাসন)। প্রয়োজনে এমডি নীতিমালা অনুযায়ী একাধিক বাছাই কমিটি গঠন করতে পারবেন। নীতিমালায় যে কোনো অস্পষ্টতা দেখা দিলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে। এই নতুন নীতিমালা চালু হওয়ায় পদোন্নতি প্রক্রিয়া হবে আরও স্বচ্ছ, ন্যায্য এবং সমতাভিত্তিক।